একেই কি বলে নরক
শুরু হয়েছে ক্ষণ গোনা,
আসছে মা, আসছে,
দেখাচ্ছে ওরা,
একশ দিন,
নব্বই দিন
আশি দিন,
সত্তর দিন,
কমতে কমতে
এলো সেই বোধন,
মা, তুমি এলে,
ছেলে মেয়েরা এলো,
হাজির, মহিষাসুরও সশরীরে,
গত বিসর্জনে "ওরা" বলেছিল,
"আসছে বছর আবার হবে",
এবারের প্রেক্ষাপট অন্য প্রকারান্তর,
যদিও কমেছে পশু বলি,
মানুষ বলি কিন্তু যত্রতত্র,
পশু আর মানুষে
বিভাজন নেই আর,
শিক্ষা ঢেকেছে আস্তরণে,
দেব দেবী এখন নেপথ্যে,
নাটমন্দির যেখানে সেখানে,
রাজনৈতিক চিহ্নে সেজেছে হাড়িকাঠ,
পেটের পরিধি বাড়ছে মানবকূলে,
খাবারের যোগান চাই,
চাই প্রসাধন, চাই বিলাসিতা,
ভরপুর হওয়া চাই জীবন,
কাম, কামিনী, কাঞ্চনে।
বিশ্বাস, নির্ভরতার ঠাঁই নেই আর,
অস্থিরতা, হিংসা, বিদ্বেষ,
বেধেছে দানা রক্তবীজে,
উল্লাস, আতঙ্ক, চলেছে পাশাপাশি,
দেখছে সবাই, সইছে সবাই,
পথ হারিয়েছে সংঘবদ্ধ প্রয়াস,
অবরুদ্ধ এখন প্রতিবাদী কন্ঠ,
এ জীবন-ছবি আমি চিনিনা,
এমন জন্ম চাইনি কখনও,
অচেনা এ দৃশ্য উত্যক্ত করে
অহরহ, সংগ্রামী মনে আমার,
প্রতি রাতে নিভৃতে একান্তে,
ধৈর্যের বাঁধের বাঁধন কেঁপে ওঠে
অন্তহীন জলোচ্ছ্বাসে।
গলি শেষে বড় রাস্তার ঢালে দাঁড়িয়ে
চিৎকার করে জানান দিতে চাই,
এ আমার জন্মভূমি হতে পারে না,
এমন স্বাধীনতা আমি
বা আমারা চাইনি,
এখানে জহ্লাদের বদ্ধ ভূমিতে হুঙ্কার
প্রতিধ্বনিত আকাশে বাতাসে বারংবার,
তবেকি পূর্ব জন্মের প্রায়শ্চিত্ত এমনই,
না কি আমরা ফিরছি
উদভ্রান্ত এক আদিমতায়।
মা, তুমি স্বর্গ হতে তো এলে,
বলনা সেখানে কেমন পরিবেশ
গনতন্ত্র না কি মাফিয়াতন্ত্র।
উগ্র ব্যভিচার না শান্ত প্রসন্নতা,
মা, এবার মর্ত্যে পদার্পনের আগে,
চলো যাই নরক পরিক্রমায়,
দেখাব তোমার সাধের মর্ত্যে
কেমন চলছে অসুরী শাসন,
এক অসুর নিধনে, জন্ম নিচ্ছে
শত সহস্র অসুর,
রোগে শোকে জর্জরিত আজ
তোমার সাধের মর্ত্য,
দুঃখ পেয়োনা, ঢেকোনা চোখ আঁচলে,
একটি বার বলো,
"একেই কি বলে নরক"?
না কি "মহিমান্বিত মর্ত্যধাম"
বলো মা বলো।।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন