তাইতো তুমি, তোমার মতো
// তাইতো তুমি, তোমার মতো //
দেখোতো, আমায় চেনো কিনা?
দেখেছো কি কখনও চলার পথে,
পথ চলতি মানুষের ভীড়ে,
একরাশ কোলাহলে, আনন্দ উচ্ছ্বাসে,
আবার, আকাশ ভোরে
কাঁধে ঝোলানো বই ব্যাগে
পাড়া পেরিয়ে স্কুলের পথে,
আমি, সেই কুমারী ফ্রিল সাঁটা ফ্রক সাজে।
দেখোতো, আমায় দেখেছো কিনা?
পূজার মন্ডপে বসন্ত পঞ্চমীতে,
অপরিণত শরীরে বাসন্তী বসনে,
রিঠা ধোয়া, হাঁটু ছোঁয়া, এলো কেশে,
হাসিতে যার, টোল ভাসে কপোলে,
তার কাজল টানা ডাগর দুটি চোখ হ'তে,
ফেরানো কি যাবে দৃষ্টি কারো?
আমি, সেই ষোড়শী কিশোরী।
মনে কি পড়ে কিছুকাল আগে,
খোলা চুলে, বাহারি ব্যাগ কাঁধে,
বাতানুকূল বাসের লাইনে দাঁড়িয়ে,
ফোন কানে নিশ্চুপ অপেক্ষায়,
কলেজে ক্লাশের হাজিরার তাগিদে।
লাইনে দাঁড়ানো
কয়েক জোড়া চোখ
অতন্দ্র প্রহরায় ঘিরেছে যাকে
বসন্ত যৌবনে ভরপুর
তার দেহ মন,
আমি, এক উন্নাসিক সেই যুবতী।
আমার বিদেশি
সুগন্ধির আকর্ষণে,
"ন টার" মেট্রোর
ভীড় কামরায়, তুমি
দাঁড়তে এসে, আমার পাশে,
স্বল্প ফাঁকে,
আমার গন্তব্য ছিল "ময়দান",
আমি নামতাম,
তুমি চেয়ে চেয়ে দেখতে,
আমি বুঝতাম,
আমি যে এক তন্বী,
মোহময়ী, রূপসী,
মনে মনে আমি তা জানতাম।
কত দিন দেখিনি তোমায়,
আজ বিজয়া দশমী, দেখছি
চেনা চেহারা, চেনা হাসি,
চেনা মুখ,
মাচায় চড়ে লাল পেড়ে শাড়িতে,
বধূ বেশে, ডালা হাতে,
করছ বরণ,
ঢাকের কাঠিতে বাজছে
বেহাগের সুর,
প্রস্তুতি পর্ব চলছে,
মায়ের শেষ যাত্রার।
একি বিড়ম্বনা বল দেখি,
দুজন দুজনকে, দূর থেকে দেখলাম, চিনলাম,
বোঝাতো গেল না,
ছিল কিনা কিছু
বলার তোমার?
আমার ও যে,
বলার ছিল অনেক কিছু,
সবই যে না বলাই রয়ে গেল,
পায়ে পায়ে তুমি চলে গেলে,
চলার পথে আমি চেয়ে রইলাম,
হারিয়ে গেলে তুমি একান্তে নিরালায়,
তাইতো, তুমি তোমারই মতন,
হয়েছো আমার এতই আপন ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন