শ‍্যামলা গাঁয়ের শ‍্যামলা মেয়ে






দেখেছি তাকে শ‍্যামলা ছায়ে
সোনালি ধানের খামার পাশে
কেড়েছে নজর ফিতের ফুলে
কুশবরণ কেশে বিনুনী দোলে
স্কুলের পথে গ্রামের শেষে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি
মাঝরাতে আমার পরীর দেশে
সুরেলা গলায় গান গেয়ে যায়
পাখনা মেলে নীল আকাশে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি
উঠতি বেলায় দালান দাওয়ায়
খুশীর মনে ঝিলিক চোখে
ব‍্যস্ত কেবল এক্কা দোক্কায়।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি
জাবর কাটা গাভীর পাশে
কচি হাতে দিচ্ছে ভরে
চারির কানা খড় ও ঘাসে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি
ঠেলতে হেঁসেল হাসি মুখে
তাকের ওপর রাখতে বাসন
খুশীর দোলা রেখে বুকে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি
দিচ্ছে সাঁতার দীঘি জুড়ে
পাতি হাঁসের পাখনা ছুঁয়ে
খেলছে শরীর জলে মুড়ে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি 
শাপলা ফুলের শাপলা পাতায়
মুক্ত কেশে মুক্ত বেশে
নাইতে কেবল শ্রাবণ ধারায়।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি 
চৈত্র মাসের ঠিক দুপুর বেলায়
কুশী হাতে সই এর সাথে
আম বাগানে ছায়ার তলায়।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি 
হল যুবতী কিশোরী কেটে
চোখ মেলে সে দোসর খোঁজে
শাড়ীর আঁচল বুকে সেঁটে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি 
নববধূ বেশে নত মুখে
কুটছে ফুল, কুটছে ডিম, কুটছে পা
ছাঁদনাতলায় গভীর সুখে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি 
আঁতুর ঘরে শিশুর পাশে
উদলা বুকে ঢালছে সুধা
খাচ্ছে চুমো, শিশু হাসে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি 
অশনি চোখে দাওয়ায় বসে
কী আশাতে কাটছে দিন
গুনছে ক্ষণ ক্ষুধার ক্লেশে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি 
হারিয়ে যেতে শহুরে ভিড়ে
স্থল যানের অস্থায়ী পথে 
শ্রাবণ শেষে ভাঙা নীড়ে।

সেই মেয়েটিকে দেখেছি আমি 
লাশের বেশে লাইন ঘেঁষে
হাসনুহানার গন্ধ ছুঁয়ে
থ‍্যাঁতলানো চিবুকে দিনের শেষে।

সেই মেয়েটিকে ভাবছি আমি 
চাইবে জবাব আমার কাছে।
শ‍্যামলা মেয়ে শ‍্যাওলা পায়ে
ফিরবেনা আর সবার মাঝে।।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

একেই কি বলে নরক

লালবাবু

हम हैं भारतवासी