সৃষ্টি, স্থীতি, বিনাশ
তিন যুগ পেরিয়ে এলেম আবার,
দেখতে তোমায়, "আছো কেমন"?
হচ্ছে মনে, ছিলে যেমন তেমনই আছো,
আদলে, তেমনটি ফারাক নেই যে কোনো৷
পাহাড় তুমি ঘুমিয়ে আছ, এমন করে,
হাত পা গুঁজে উপুর হয়ে ঘাপটি মেরে,
ডাকছি তোমায় বলছি, "জাগো, জাগো"
তবুও নিথর তুমি, ভ্রক্ষেপ নেই যে কোন ৷
সূর্যের ঝলমলে আলোয়
দৃষ্টি মেলে দেখি যে তোমার
রুপোলি অঙ্গে সোনালি সুখ,
সবুজে সবুজে বিলীন বনানী,
হাতছানি দেয়, দেখাবে বলে,
মন ভোলানো এমন সে রূপ ৷
সাত সকালে সেজেছো তুমি,
নববধূ বেশে স্নিগ্ধ সাজে,
রাঙিয়েছো টিপ কপাল জুড়ে,
সূর্যকে সাজের সঙ্গী করে৷
টুকরো টুকরো মেঘের দল
চুমে যায় চিবুক তোমার
চলতে চলতে চলার পথে,
কানে কানে কিছু কি বললো তারা
সোহাগ ভরে আপন করে ?
হঠাৎ করে কি যে ঘটল এমন ,
মতিগতিতে মেঘেদের হলো
আমূল অদল বদল,
ওপর হতে মেঘ দিলো বিছিয়ে
বাদল ভরা মেঘের আঁচল ৷
ক্ষনিকে, আকাশ ঘিরে
ঘণ ঘণ মেঘেদের গর্জন,
চারিধার ঢেকেছে গাড়ো অন্ধকারে,
বিদ্যুতের ঝলকে ঝলকে
আলো আঁধারির খেলা চলে,
বিস্তীর্ণ আসমানের কোল জুড়ে ৷
বাঁধভাঙা বর্ষণ ছিঁড়ছে বাঁধন,
পাহাড়ের আঁচলে আঁচলে,
ভাঙছে পাহাড় নাবছে ধ্বস
অবাধ গতিতে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে,
রুদ্ররূপে ধংসলীলায় উন্মত্ত প্রকৃতি,
শঙ্কিত জীবকূলের হাহাকর চারিধারে,
স্বজন হারা কান্নার রোলে
মুখরিত আকাশ বাতাস ,
দিশেহারা হয়ে ছুটছে ওরা এধার ওধার
নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ৷
এ ভাবেই যুগের পর যুগে,
প্রকৃতির খামখেয়ালিতে,
দুর্যোগের মোকাবিলায়,
অসহায় মানুষকে, মৃত্যুর সঙ্গে
পাঞ্জা লড়তে লড়তে
মৃতের মিছিলে সামিল হতে হবে ,
বোধ হয়, বিধাতার বিধান এমনই ৷
তিনটি মন্ত্রে গেঁথেছে সে এ ধরাধাম,
" সৃষ্টি, স্থিতি, বিনাশ "
তিনিই ব্রহ্ম, তিনিই নিত্য, তিনিই অনন্ত ||
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন