অনুভবে - মেঘ

  


 লে যদি এতকাল বাদে,
কেন কড়া নাড়তে গেলে
হাজির হয়ে দোরগোড়াতে?
উঁচুতে একটু হাতরালেই তো
কলিংবেলটার নাগাল পেতে

সংশয় হয়তো ছিল এমনই,
তোমাকে সাক্ষাতে দেখে এভাবে,
এখানে সবাই যাবে চমকে,
থমকে যাবে ভাষা তাদের
পরিচয়ের নাগাল পেতে

দ্বিধা দ্বন্দ্বের দোটানা এমনই
হঠাৎ এমন হাজির হওয়া
না জানিয়ে এত কাল বাদে
কে কিভাবে নেবেএই ভেবে

নানাআমি কিন্তু
ঠিকই চিনেছি তোমায়
ঝুলবারান্দায় ঝুঁকে
কাপড় মেলে দিতে দিতে,
হ্যাঁএখন আর আমি
দশম শ্রেনীর সেই বৃষ্টি নই
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে
শামিল জীবন যুদ্ধে

মনে পড়ে মেঘ,
তুমি কেমন বোকা বোকা ছিলে,
নটার সাইরেনে যখন,
আমি স্কুলবাসের অপেক্ষায়
দাঁড়িয়ে ছাউনির নিচে
তুমি কোচিং ফেরত আসতে
ছুটতে ছুটতে দেখতে আমায়
মনে হতোতুমি কিছু বলতে চাও,
কিন্তু পারোনি

অনুসরণ করতে করতে
আমার বাড়িটা চেনা তোমার

সেই শেষ দেখা তোমাকে,
সেই শেষ ছোঁয়া তোমাকে,
স্কুলের সঙ্গীত প্রতিযোগিতার শেষে 
শুভেচ্ছা সাক্ষাতে

সেদিন আমার জন্মদিন ছিলো,
গ্রীনরুমে হাজির হলে,
হাতে ধরিয়ে দিলে গীতবিতান
সঙ্গে একগুচ্ছ গন্ধরাজ,
মলাট উল্টে দেখি - লেখা তাতে
"অপেক্ষায় রইলাম অনুভবে-মেঘ",
শুকনো ফুলের পাপড়িতে
চিহ্ন রেখেছি গীতবিতানে,
এক একটা রাত কেটেছে আমার
অনুভবেগানের সুরে,
সীমাহীন অপেক্ষার বন্ধনে
সান্ত্বনার নিবিড় প্রলেপে

দেখলামশাড়ির দুফোটা জল
পড়লো মেঘ' মাথায়,
আড়াল করলাম নিজেকে,
ও দেখলো সাড়া নেই কোনো,
 ফিরে গেল মোরামের পথে,
আমি চেয়ে চেয়ে দেখলাম,
আমার যা ছিল বলার,
হলো না যে বলা আজও,
ওরো কি ছিল কিছু বলার?
তাও রয়ে গেল অজানা আমার,
মায়ের গলা এলো ভেসে,
"কে এলো রে বৃষ্টি"?
঵না মা আমাদের চেনা কেউ নয়
"উনি ঠিকানা খুঁজছিলেন,
ভুল হয়েছে ভেবে ফিরে গেলেন

আমি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে সেখানে
ঝুপ করে নেবে এলো
এক ঝাঁক বাদল ছাওয়া মেঘ
ভিজিয়ে দিল আমায়
আমি ভিজলাম, 
শুধু ভিজলাম, ভিজলাম।।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

একেই কি বলে নরক

লালবাবু

हम हैं भारतवासी